#আর_কবে_দশভুজা_হবো
কোনও কোনও বাচ্ছার মাকে যদি জিজ্ঞেস করেন বাচ্ছা খুব শান্ত, না? মা উত্তর দেন 'ওই আরকি'।অনেকের আজীবন ওই আরকি হয়েই কেটে যায়। এই যেমন আমার। চারপাশে সদর্থেই দশভুজাদের যখন দেখি মনে মনে ভাবি আমি ধোপার গাধা। বরাবর লেখাপড়ায় ওই আরকি। কিছুতেই খারাপ বলতে পারত না কেউ কিন্তু কস্মিনকালেও এক্সিলেন্ট হওয়া হলো না। খেলাধুলো আর নাই বললাম অথচ খেলা দেখতাম বিশেষজ্ঞের মতো। নাচ,গান, ছবি আঁকা ওই আরকি। হাতের লেখা ওই আরকি। লেখার হাত ওই আরকি। গায়ের রঙ ধলা কিন্তু কি নেই কি নেই, উচ্চতা মাত্র পাঁচ, চুল এক কালে ছিল, নাক টিকলো কিন্তু অতিরিক্ত, কান প্রয়োজনের তুলনায় ছোট(নির্বোধ আর বুদ্ধিমান কানের সাইজ দিয়ে মাপা যায়), চোখ বড় কিন্তু টু থেকে চশমা পরে গভীর গর্তে, পৃথিবীর সমস্ত ইন্টিরিওর ডিজাইনিংয়ের সাইট দেখি, কিন্তু স্তুপাকৃত জামা কাপড় আর বইয়ের তাকের জমতে থাকা ধুলোর গতি করতে পারিনা মিতালি দি, মিনতিদের ছাড়া। আজীবন খেতে ভালোবাসি অথচ এ পর্যন্ত, মা, জেঠিমা, শাশুড়ি আর রান্নার মাসির ওপর জীবন কেটে গেলো। স্বামীর জাঙ্গিয়ার সংখ্যা থেকে রোজগারের পরিমান কিছুই মনে রাখতে পারিনা। বেশিদিন চাকরি করতে ভালো লাগেনা, অথচ বেশিদিন বাড়ি বসে থাকলে মনে হয় নিপীড়িত, অসহায় বঞ্চিত। কারো অসুখ করলে সেবা করতে পারিনা অথচ মাথা,ধরলেও বাম লাগানোর লোক চাই। ঠাকুর দেবতায় অবিশ্বাস নেই অথচ জীবনে একখানা ধূপ কাঠিও ঘোরানো হয়নি। না হলাম বামপন্থী না হলাম দক্ষিণ পন্থী। আল্ট্রা লেফট তো ভয়েই হব না। ছেলে পিলের বালাই নেই অতয়েব মাতৃরূপেণও নই। উজিয়ে রাত জেগে ঠাকুর দেখতে পারলাম না অথচ মনে মনে হুল্লোড় বেশ ভাল্লাগে। জম্মে নেশা করলাম না অথচ ভালো ওয়াইন দেখলে জিভ লকলক করে। অচেনারা বলে হেব্বি ব্যক্তিত্ব কাছের লোকেরা বলে ক্যাবলা, লুজ টকের পাহাড়। ভরা পঞ্চমীর দিন বসে ভাবছি আমার ওই আরকি হয়ে জীবন কেটে গেলো মাইরি। আর কবে,দশভুজা হবো?
No comments:
Post a Comment