এই রাত বারোটায় আমার বাড়ির লাগোয়া পুকুরে প্রচন্ড জোরে ভোজপুরি গান বাজিয়ে গণেশ ভাসান হচ্ছে। অথচ আমি অদ্ভুত প্রশান্ত। আমি জানি এ জীবন থেকে আর আমার মুক্তির উপায় নেই। এই ভোজপুরি গান, ডিজে বক্স, রাস্তা বন্ধ করে পুজো, প্রচন্ড জ্যাম, ভাঙা ব্রিজ, এবড়োখেবড়ো রাস্তা, অটোওলাদের অসভ্যতা, বেপোরয়া বাস, বিভৎস উল্লাস ইত্যাদি আরও অনেক কিছুর কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছি। ধরে নিয়েছি এইটুকুই শহরে থাকার সুখ। সত্তর বছর ধরে এ দেশে মানুষ এ ভাবেই আছে। আমার মত গ্রাম থেকে শহরে মাইগ্রেটেড বাসিন্দারা ভুলেও ফিরে যাবার স্বপ্ন দেখবেন না। দেখবেন আপনার প্রশান্ত ভূমিতেও ছড়িয়ে পড়ছে গণেশ বন্দনার সুর। এসবে আমার কোনও অভিযোগ নেই। কার ওপরেই বা রাগ করব। যাদের চোখের সামনে দেখি তারা তো আমারই মত অদৃশ্য সুতোতে বাঁধা পুতুল মাত্র। কখন যে জড়িয়ে গেছে সে সুতোতে নিজেও জানেনা।
ফেসবুকে সাঁটা অন্যের ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া এ জীবনে আছেটাই বা কী! সুইমিংপুল আর জিমওয়ালা হাউজিং কমপ্লেক্সে ফ্লাট নেই, বাড়িতে পোষা পাগ নেই, ফাইভস্টার হোটেলে ডিনার নেই, বিরাট কাচের দরজাওয়ালা ড্রইংরুমে বসে দার্জিলিং চা নেই, নিদেন পক্ষে থার্ডপার্টি ইনসিওরেন্সের সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়িও নেই একখানা। কখনো সখনো গরীব রথে পুরী গেলে অথবা ফ্লাইটে ত্রিপুরা গেলে শালার খুড়শ্বশুরও জানতে পারে সে কথা। বহুকাল ফ্লাইটের ট্যাগ ছিঁড়ে ফেলা হয় না বাক্স থেকে। এ জীবনে তাই খুশি থাকতে গণেশ পুজোর প্যান্ডেলে শাঁখ বাজিয়ে ট্রফি জিততে হয়। চোখের সামনে ঝুলিয়ে রাখা মায়ার ওপারে চোখ যায়না আমাদের। তবু বলি আমরা তো অল্পে খুশি।
উদাহরণ হিসেবে একটা গল্প বলি। দীর্ঘ অটোর লাইন, ঘোড়ার পেছনে বেধে দেওয়া মানুষের মত সাটেলের পেছনে দৌড়, দু'একটি বাসে এক হাতে ঝুলতে ঝুলতে টালিগঞ্জ থেকে বেহালা ফেরা মানুষগুলো হঠাৎ করে একটা নতুন বাসের সন্ধান পেয়েছেন। ব্রিজ ভাঙার পর মানুষগুলোর দুর্দশার কথা শুনে সরকারই সে ব্যবস্থা করেছেন। সকলে হয়ত বসতেও পারেন না সে বাসে।কিন্তু বিশ্বাস করুন বাসের মানুষগুলোর মুখে যে হাসি আমি প্রথমদিন বাস চালু হবার পর আমি দেখে ছিলাম তা সন্তান জন্মবার পর প্রথম হাতে নেওয়া মায়ের মুখের হাসির চেয়ে কম প্রশান্তির, কম সন্তুষ্টির নয়। আমিও সেদিন ভারি খুশি ছিলাম এ উদ্যোগে। আমার মন সারা বাস বলে গেলো 'আমরা তো অল্পে খুশি, কি হবে দুঃখ করে, আমাদের দিন কেটে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে'।
ফেসবুকে সাঁটা অন্যের ছবি দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া এ জীবনে আছেটাই বা কী! সুইমিংপুল আর জিমওয়ালা হাউজিং কমপ্লেক্সে ফ্লাট নেই, বাড়িতে পোষা পাগ নেই, ফাইভস্টার হোটেলে ডিনার নেই, বিরাট কাচের দরজাওয়ালা ড্রইংরুমে বসে দার্জিলিং চা নেই, নিদেন পক্ষে থার্ডপার্টি ইনসিওরেন্সের সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়িও নেই একখানা। কখনো সখনো গরীব রথে পুরী গেলে অথবা ফ্লাইটে ত্রিপুরা গেলে শালার খুড়শ্বশুরও জানতে পারে সে কথা। বহুকাল ফ্লাইটের ট্যাগ ছিঁড়ে ফেলা হয় না বাক্স থেকে। এ জীবনে তাই খুশি থাকতে গণেশ পুজোর প্যান্ডেলে শাঁখ বাজিয়ে ট্রফি জিততে হয়। চোখের সামনে ঝুলিয়ে রাখা মায়ার ওপারে চোখ যায়না আমাদের। তবু বলি আমরা তো অল্পে খুশি।
উদাহরণ হিসেবে একটা গল্প বলি। দীর্ঘ অটোর লাইন, ঘোড়ার পেছনে বেধে দেওয়া মানুষের মত সাটেলের পেছনে দৌড়, দু'একটি বাসে এক হাতে ঝুলতে ঝুলতে টালিগঞ্জ থেকে বেহালা ফেরা মানুষগুলো হঠাৎ করে একটা নতুন বাসের সন্ধান পেয়েছেন। ব্রিজ ভাঙার পর মানুষগুলোর দুর্দশার কথা শুনে সরকারই সে ব্যবস্থা করেছেন। সকলে হয়ত বসতেও পারেন না সে বাসে।কিন্তু বিশ্বাস করুন বাসের মানুষগুলোর মুখে যে হাসি আমি প্রথমদিন বাস চালু হবার পর আমি দেখে ছিলাম তা সন্তান জন্মবার পর প্রথম হাতে নেওয়া মায়ের মুখের হাসির চেয়ে কম প্রশান্তির, কম সন্তুষ্টির নয়। আমিও সেদিন ভারি খুশি ছিলাম এ উদ্যোগে। আমার মন সারা বাস বলে গেলো 'আমরা তো অল্পে খুশি, কি হবে দুঃখ করে, আমাদের দিন কেটে যায় সাধারণ ভাত কাপড়ে'।
No comments:
Post a Comment