আমার স্থির বিশ্বাস গভীর সাহিত্য মেয়েদের কম্ম নয়। মেয়েদের জীবনের অভিজ্ঞতাই নেই,exploration of life মেয়েদের কোথায়! তাই মেয়েদের কলমের ডগা থেকে শ্রীকান্তের বার্মা যাত্রার বর্ণনা বেরোয় না, তারাপদর মত যাত্রাদলের যোগ দেবার অভিজ্ঞতার কথা বেরোয় না, পূর্ণিয়ার জঙ্গলে বসে অরণ্য উপলব্ধির কথা লিখে ওঠে না মেয়েরা। এমনকি মেয়েদের মুক্তির কথাও লিখতে হয় ইবসেন অথবা রবীন্দ্রনাথকে।
মেয়েরা লিখবে কি করে, ওরা জানেটা কি! বলশেভিক আন্দোলন জানেনা, থিয়োরি অফ আলিয়েনেশন জানে না,মিখাইল গোরবাচভ জানে না, সিরিয়া, লেবানন, সাদ্দাম হুসেন, চীনের অর্থনীতি, ইউ পি এ- র সঙ্গে এন ডি এ-র তফাৎ এসব কিচ্ছু জানে না। মেসি কোন ক্লাবে খেলে, ডার্ক ওয়ার্থ লুইস কি, প্যাট ক্যাস অথবা বিলিজিন কিং কে, ফিফটিন- লভ আসলে কি, জেমস বন্ড সিরিজের প্রথম নায়ক কে, লেডি গা গা কে, ব্লাক হোল থিওরি আসলে কি, বায়ো স্টাট কোথায় ভালো পড়ায়, গান্ধী - সুভাষের সম্পর্কের অবনতি এসব কোন খবর মেয়েরা জানে! তাহলে তারা কি নিয়ে লিখবে শুনি! কেবল ওই ঘটি বাটি কুটনো কুটি! আহা আমি যে বেচারি এই এক কথা!
সেই কবে জন্মের পর আয়ামাসি একফালি সাদা ন্যাকড়া দিয়ে বলেছিল ঢেকে রাখতে হয়, তারপর থেকে বেচারিদের ত্রিভুজ রক্ষে করতেই জীবন চলে গেলো। তাই আর বাড়ি থেকে পালানো হল না, মাঠে গিয়ে উইকেট পোঁতা হলো না, ঘুম চোখে চায়ের কাপ হাতে খবরের কাগজ পড়া হলো না, বেশ্যা পাড়ার গলি চেনা হলো না, বি এম ডাব্লু মিনি আর হুন্ডাই আই টেনের মডেলের তফাৎ বোঝা হলো না আরো কত্ত কি হলো না!
তবু ওরা লেখে,খুন্তি কড়াইয়ের সখ্যর কথা লেখে, কলসি থেকে জল গড়ানোর শব্দের কথা লেখে, প্রবাসে থাকা প্রিয়র জন্য অপেক্ষার কথা লেখে, নিবেদিত ত্রিভুজের যন্ত্রনার কথা লেখে,স্বজনের কথা লেখে, প্রেমের কথা লেখে,সন্তানের কথা লেখে, তবু ওই লেখাই হয়, মেয়েমানুষরা উৎকৃষ্ট সাহিত্য সৃষ্টি করতে পারে না এ নাকি সর্বজনবিদিত!
লেখক নীলা।
২৮.০৬.১৭
No comments:
Post a Comment